জাতীয় নির্বাচনে সেনা মোতায়েনে নির্বাচন কমিশনের ঘোষণায় সন্দেহ প্রকাশ করে বিএনপির স্থায়ী কমিটির সদস্য ব্যারিস্টার মওদুদ আহমদ বলেছেন, আমরা এতদিন সেনা মোতায়েনের দাবি জানিয়ে আসছি, কিন্তু নির্বাচন কমিশন তাতে কর্ণপাত করেনি। এখন তারা হঠাৎ করে সেনা মোতায়েনের কথা বলছে। এতে তাদের কোন দুরভিসন্ধি ও ষড়যন্ত্র রয়েছে কিনা তা নিয়ে সন্দেহ হচ্ছে।
তিনি বলেন, সেনাবাহিনী শুধু কেন্দ্রের বাইরে ঘুরে বেড়ানোর জন্য নিয়োগ করলে হবে না তারা যাতে কার্যকর ভুমিকা রাখতে পারে সে ব্যবস্থা রাখতে হবে।
শুক্রবার দুপুরে জাতীয় প্রেস ক্লাবে বাংলাদেশ ইয়ূথ ফোরামের উদ্যোগে ‘গ্রহণযোগ্য নির্বাচন: সরকারের ভুমিকা ও জনগনের প্রত্যাশা’ শীর্ষক আলোচনায় প্রধান অতিথির বক্তৃতায় তিনি এ কথা বলেন। এতে আয়োজক সংগঠনের উপদেষ্টা কৃষিবিদ মেহেদী হাসান পলাশের সভাপতিত্বে ও সভাপতি মুহাম্মদ সাইদুর রহমানের সঞ্চালনায় আরো আলোচনা করেন, বিএনপির ভাইস-চেয়ারম্যান বরকতউল্লাহ বুলু, বিএনপির চেয়ারপারসনের উপদেষ্টা হাবিবুর রহমান হাবিব, যুগ্ম-সম্পাদক খায়রুল কবির খোকন, নির্বাহী কমিটির সদস্য আবু নাসের মুহাম্মদ রহমাতুল্লাহ ও খালেদা ইয়াসমিন, জাতীয় পার্টির (জাফর) প্রেসিডিয়াম সদস্য আহসান হাবিব লিংকন, লেবারপার্টির মহাসচিব হামদুল্লাহ আল মেহেদী, এনডিপির ভারপ্রাপ্ত মহাসচিব মঞ্জুর হোসেন ঈসা, ইয়ুথ ফোরামের সহ-সভাপতি মাহমুদুল হাসান শামীম প্রমুখ।
মওদুদ আহমদ বলেন, সরকার যে বাজেট দিয়েছে তার বাইরে সুন্দর হলেও ভিতরে ফাঁকা। নির্বাচনকে সামনে রেখে এ বাজেট দেয়া হয়েছে। এতে সাধারণ মানুষের কল্যাণে কিছুই নেই। এ বাজেট দিয়ে জনগনের কোন উন্নয়ন হবে না। তিনি বলেন, বাজেটে দুর্নীতি কমানোর কোন কথা বলা হয়নি। জাতীয় নির্বাচন কিভাবে হবে তা বলা হয়নি। সুশাসন প্রতিষ্ঠার কোন কথা নেই। এ বাজেট বাস্তবায়িত হলে গরীব আরো গরীব হবে, ধনীরা আরো ধনী হবে।
বিএনপির এ নেতা চলমান মাদকবিরোধী অভিযানের সমালোচনা করে বলেন, বিরোধীদল নির্মূল করতে এ অভিযান চালানো হচ্ছে। অনেককে বাড়ি, রাস্তা থেকে ধরে নিয়ে মাদক কারবারি সাজিয়ে ঠাণ্ডা মাথায় গুলি করে হত্যা করা হচ্ছে। তিনি প্রশ্ন রেখে বলেন, আদালত কি তাদের দোষী সাবস্ত করেছে? তাহলে কিসের ভিত্তিতে তাদের হত্যা করছেন? এসব হত্যার বিচার একদিন হবে।
মওদুদ আহমদ বলেন, আমরা চাই মাদক নির্মূল হোক। কিন্তু গত নয় বছরে কেন অভিযান চলেনি? এখন নির্বাচনের আগে কেন এ অভিযান শুরু হল। আবার ইয়াবা সম্রাট আপনাদের এমপি বদিকে ওমরায় পাঠিয়ে দিলেন।
আন্দোলন প্রসঙ্গে ব্যারিস্টার মওদুদ বলেন, গণতন্ত্র পুনরুদ্ধারের জন্য জাতীয় ঐক্য গড়ে তুলতে হবে। শুধু ২০ দল নয়, সারা জাতিকে ঐক্যবদ্ধ করতে হবে। প্রয়োজনে বিএনপিকে ত্যাগ স্বীকার করতে হবে। ক্ষমতা নয় গণতন্ত্র ও ভোটের অধিকার ফিরিয়ে আনাই হবে আমাদের লক্ষ্য। তিনি সরকারকে তত্ত্বাবধায়ক সরকার ফিরিয়ে আনার আহবান জানিয়ে বলেন, আপনারাই এটি প্রতিষ্ঠা করেছিলেন, আবার আপনারাই বাতিল করেছেন। এখন আপনাদেরই এটি ফিরিয়ে আনতে হবে। এক্ষেত্রে সংবিধানের দোহাই দিলে চলবে না। কারণ সংবিধান মানুষের জন্য, সংবিধানের জন্য মানুষ নয়।
সূত্র: নয়াদিগন্ত