অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
কেএম নুরুল হুদার নেতৃত্বাধীন নির্বাচন কমিশন গঠিত হওয়ার পরই আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনসহ সকল নির্বাচন ইস্যুতে সুশীল সমাজ, বিশিষ্টজনসহ সকল রাজনৈতিক দলের সঙ্গে সংলাপ করেছিল তারা। ইসির এই সংলাপে ক্ষমতাসীন দল আওয়ামী লীগ আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচনে ইলেকট্রনিক ভোটিং মেশিন (ইভিএম) ব্যবহারের পক্ষে মতামত দিয়েছিল। আর প্রধান বিরোধীদল বিএনপিসহ বেশ কয়েকটি রাজনৈতিক দল ইভিএমের বিপক্ষে মতামত দেয়।
দেখা গেছে, বিএনপির মতামতকে উপেক্ষা করেই সিটি ও স্থানীয় সরকারের কিছু নির্বাচনে ইভিএম ব্যবহার করছে নির্বাচন কমিশন। যেসব জায়গায় ইভিএম ব্যবহার হয়েছে সবখানেই সমস্যা দেখা দিয়েছে। এতে ভোটাররাও প্রচণ্ড ক্ষোভ প্রকাশ করেছে।
বিরোধী রাজনৈতিক দলগুলোর পাশাপাশি আইটি বিশেষজ্ঞসহ বিশিষ্টজনেরাও এখন ইভিএমের বিপক্ষে অবস্থান নিয়েছেন। কিন্তু, নির্বাচন কমিশন এসব মতামতকে কোনো পাত্তাই দিচ্ছে না। আওয়ামী লীগের আগ্রহে সাড়া দিয়ে নির্বাচন কমিশন ইতিমধ্যে ২ হাজার ৫৩৫টি ইভিএম কিনে ফেলেছে, যার ৩৮০টি গত সপ্তাহে তাদের হাতে এসে পৌঁছেছে। বাকিগুলো কিছুদিনের মধ্যেই পৌঁছাবে। সব মিলিয়ে ১২ হাজার ইভিএম কেনা হতে পারে।
খোঁজ নিয়ে জানা গেছে, আগামী একাদশ সংসদ নির্বাচনে ডিজিটাল পদ্ধতিতে ভোট ব্যবহারের চিন্তাটা আসে প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনার ছেলে সজিব ওয়াজেদ জয়ের মাথা থেকে। অবাধ সুষ্ঠু নির্বাচনের মাধ্যমে কীভাবে ভোট জালিয়াতি করা যায় সেই টার্গেট নিয়েই মূলত জয় ইভিএম পদ্ধতির কথা জানান।
জানা গেছে, ইভিএমে এমন একটা সিস্টেম আছে যার কারণে একজন ভোটার তার পছন্দের প্রার্থীকে ভোট দিলেও সেটা অন্য প্রতীকে নিয়ে যাওয়া সম্ভব হবে। ভোটাররা বাধাহীন ও শান্তিপূর্ণভাবে ধানের শীষে ভোট দিয়ে আসলেও পরে দেখা যাবে সিল লেগে আছে নৌকা প্রতীকে। অর্থাৎ জনগণ বিএনপিকে ভোট দিলেও বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ। ভোট জালিয়াতিটা এমন সুক্ষ্মভাবে হবে যাতে দেশি-বিদেশি পর্যবেক্ষক মহল নির্বাচন নিয়ে কোনো প্রকার প্রশ্ন তুলতে পারবে না।
এখন, জয়ের সেই পরিকল্পনা বাস্তবায়নে নিরবে কাজ করে যাচ্ছে নির্বাচন কমিশন। তাদের টার্গেট একটাই- আগামী একাদশ জাতীয় সংসদ নির্বাচন বাহ্যিকভাবে অত্যন্ত সুষ্ঠু, অবাধ, নিরপেক্ষ ও শান্তিপূর্ণ হবে। তবে, সেই নির্বাচনে বিজয়ী হবে আওয়ামী লীগ।