ভোটের দিন মোবাইল ফোন ও ইন্টারনেট সেবা বন্ধের বিপক্ষে মত দিয়েছে মোবাইল ফোন অপারেটররা। একইসঙ্গে ফেসবুকসহ সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম বন্ধ করা সম্ভব নয় বলে জানিয়ে দিয়েছে বাংলাদেশ টেলিকমিউনিকেশন রেগুলেটরি কমিশন (বিটিআরসি)। তবে তারা সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে যাতে গুজব ছড়িয়ে নির্বাচনে বিশৃঙ্খল পরিস্থিতি সৃষ্টি না হয়, সে বিষয়ে মনিটরিং জোরদারের কথা বলেছে।
মঙ্গলবার (৮ মে) বিকালে নির্বাচন কমিশনের সঙ্গে এক মতবিনিময়ে এ অভিমত জানানো হয়। নির্বাচন কমিশন সচিব হেলালুদ্দীন আহমেদের সভাপতিত্বে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে নির্বাচনি সংবাদ প্রকাশ ও প্রচার বিষয়ক নীতিমালা প্রণয়ন সংক্রান্ত এ বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। বৈঠকে বিটিআরসি, টেলিযোগাযোগ মন্ত্রণালয়, মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রতিনিধিসহ সংশ্লিষ্টরা অংশ নেন। এসময় ইসির অতিরিক্ত সচিব মোখলেসুর রহমান, যুগ্ম সচিব মিজানুর রহমান খন্দকার, এস এম আসাদুজ্জামান, ফরহাদ আহাম্মদ খান, উপ-সচিব ফরহাদ হোসেন ও তথ্য অধিদফতরের কর্মকর্তাসহ সংশ্লিষ্টরা উপস্থিত ছিলেন।
বৈঠকে ইসির প্রস্তাবনায় বলা হয়, ফেসবুকসহ বিভিন্ন সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে প্রতিদ্বন্দ্বী প্রার্থীর বিরুদ্ধে নানা ধরনের অপপ্রচার চালাতে দেখা যায়। প্রার্থীর বিকৃত ছবি, অসত্য ও মানহানিকর তথ্য প্রকাশ করা হয়ে থাকে। এছাড়া, নানা ধরনের বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালাতে দেখা যায়, যা নির্বাচনি পরিবেশ উত্তপ্ত করে। মোবাইল ফোনের এসএমএসের মাধ্যমেও বিদ্বেষমূলক অপপ্রচার চালাতে দেখা যায়।
ওই প্রস্তাবনায় অনলাইন মনিটরিং সেল গঠন, যেসব ফেসবুক আইডি থেকে অপপ্রচার চালানো হয়, তা শনাক্ত করে ব্যবস্থা নেওয়ার প্রস্তাব করা হয়।
জানা গেছে, বৈঠকে মোবাইল ফোন অপারেটরের প্রতিনিধিরা বলেন, একসময় ভোটের দিন মোবাইল ফোন নেটওয়ার্ক বন্ধ থাকলেও বর্তমানে সেই সুযোগ নেই। এছাড়া, মোবাইল ফোন বন্ধ রাখা হলে গুজব বেশি ছড়াবে, জনমনে আতঙ্ক ও নেতিবাচক ধারণা সৃষ্টি হবে। মোবাইল ভয়েস ও ডাটা বন্ধ করা হলে কমিশনের কার্যক্রমেই বিঘ্ন ঘটবে। কারণ, এটা হলে নির্বাচন কর্মকর্তা ও ভোটের দায়িত্বে থাকা আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর মধ্যকার যোগাযোগ ব্যবস্থা ভেঙ্গে পড়বে। গণমাধ্যমগুলোর সরাসরি সম্প্রচারসহ সংবাদ পরিবেশনে প্রতিবন্ধকতা সৃষ্টি হবে।
ফেসবুক বন্ধ করা সম্ভব নয় মন্তব্য করে বৈঠকে বিটিআরসির প্রতিনিধি জানান, ফেসবুকের সঙ্গে বাংলাদেশ সরকারের চুক্তি নেই। তবে বিভিন্ন স্পর্শকাতর ইস্যুতে ফেসবুক কর্তৃপক্ষকে মেইল করা হলে তারা সেই অনুযায়ী ব্যবস্থা নিয়ে থাকে। বৈঠকে সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে অপপ্রচার বন্ধে সবাই সহযোগিতা করবেন বলে ইসিকে আশ্বস্ত করা হয়।