অ্যানালাইসিস বিডি ডেস্ক
স্বৈরতান্ত্রিক দেশ হিসেবে আন্তার্জাতিক স্বীকৃতি পাওয়ার পর প্রথমবারের মত স্বাধীনতা দিবস পালন করলো বাংলাদেশ। যদিও স্বৈরতান্ত্রিক দেশ মানেই সেখানে স্বাধীনতা বলতে কিছু থাকবে না। এবং ঠিক এমন একটি পরিস্থিতিতেই বাংলাদেশের মানুষ পালন করলো তাদের ৪৭তম স্বাধীনতা দিবস।
স্বাধীন সার্বভৌম দেশে মানুষের গণতান্ত্রিক অধিকার নেই। নেই বাক স্বাধীনতা। এমন একটি দেশে স্বাধীনতা দিবস পালন করা খুবই বেমানান। স্বাধীনতা অর্জিত হয়েছিলো ৪৭ বছর আগে। কিন্তু সেই স্বাধীনতা আজ ভূলুণ্ঠিত। এমন প্রেক্ষাপটে ভূলুণ্ঠিত সেই স্বাধীনতাকে ফেরত চায় দেশের জনগণ।
বিএনপি-জামায়াতের শাসনামলে দেশের জনগণ ছিল অধিকার হারা। মানুষের বাকস্বাধীনতা তারা কেড়ে নিয়েছিল। নির্বাচনে জনগণ তাদের ভোটাধিকার প্রয়োগ করতে পারেনি। আর আওয়ামী লীগ ক্ষমতায় আসার পর দেশের গণতন্ত্রের ভিত্তি যেকোনো সময়ের চেয়ে মজুবত হয়েছে। দেশের মানুষ তাদের গণতান্ত্রিক ও ভোটের অধিকার ফিরে পেয়েছে। দেশে আইনের শাসন ও সুশাসন প্রতিষ্ঠিত হয়েছে। বিগত ৯ বছর ধরে নিয়মিত এমনসব অসত্য বক্তব্যই দিয়েছেন প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা।
বিরোধী রাজনৈতিক দল, সুশীল সমাজ, রাজনীতিক বিশ্লেষকসহ মানবাধিকার সংস্থাগুলো সরকারের এ এসব দাবি ভিত্তিহীন বলে আখ্যাও দিয়ে আসছেন। কিন্তু স্বৈরশাসকদের বৈশিষ্ট্য অনুযায়ী বাংলাদেশের সরকারও বিরোধী ও ভিন্নমতকে কঠোরভাবে দমন করেছে। কিন্তু সর্বশেষ সরকারের মুখোশ উম্মোচন করে দিলো জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’। প্রতিষ্ঠানটি এবার কথিত উন্নয়নের রাণী শেখ হাসিনার গায়ে স্বৈরাচারের তকমা লাগিয়ে দিয়েছে।
গত শুক্রবার প্রকাশিত এক গবেষণা প্রতিবেদনে জার্মানির এই প্রতিষ্ঠানটি বলেছে, বাংলাদেশ এখন স্বৈরশাসনের অধীন এবং দেশটিতে বর্তমানে গণতন্ত্রের ন্যূনতম মানদণ্ড পর্যন্ত মানা হচ্ছে না। বিশ্বের ১২৯ টি দেশের গণতন্ত্র, বাজার অর্থনীতি এবং সুশাসনের অবস্থা নিয়ে এক সমীক্ষার পর জার্মান প্রতিষ্ঠান তাদের রিপোর্টে এই মন্তব্য করে। রিপোর্টে বলা হয়েছে, বহু বছর ধরেই বাংলাদেশে গণতন্ত্রকে ক্ষুন্ন করা হচ্ছে। ত্রুটিপূর্ণ নির্বাচনী ব্যবস্থার কারণেই এটা ঘটেছে।
বিবিসি বাংলায় প্রকাশিত সংবাদে ব্যবহৃত চিত্রে দেখা যাচ্ছে জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠানটির প্রতিবেদনে বিশ্বে নতুন যে ৫টি স্বৈরতান্ত্রিক দেশের কথা উল্লেখ করা হয়েছে এর মধ্যে বাংলাদেশের অবস্থান দ্বিতীয়।
এদিকে, রাজনীতিক বিশ্লেষকরা বলছেন, জার্মানির গবেষণা প্রতিষ্ঠান ‘বেরটেলসম্যান স্টিফটুং’ যে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে তা শতভাগ সঠিক। এর বিপরীতে শেখ হাসিনা ও তার দলের নেতারা দীর্ঘদিন যাবত আইনের শাসন, গণতন্ত্র, মানুষের অধিকার প্রতিষ্ঠার যে দাবি করে আসছে সবই ভিত্তিহীন ও ভুয়া।