তাবলীগ-জামাতের দুপক্ষের দ্বন্দ্বের জেরে বিক্ষোভের মধ্যেই বুধবার সন্ধ্যায় মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ কান্ধলভীকে বিমানবন্দর থেকে কাকরাইল মসজিদে নেওয়া হয়। একইসঙ্গে নিরাপত্তাজনিত কারণে পুলিশ মসজিদের মূল ফটক বন্ধ ও ভেতরে থাকা মুসুল্লিদের বের করে দেওয়া হয়। এতে মসজিদে চিল্লা করতে আসা মুসুল্লিরা পড়েছেন মহাদুর্ভোগে।
নোয়াখালী থেকে কাকরাইল মসজিদে চার মাসের চিল্লায় আসেন মো. ইসমাইল (৫৯) নামের এক বৃদ্ধ। ভুক্তভোগী মো. ইসমাইল প্রিয়.কম-কে জানান, তিনি আজ (বুধবার) বিকেলে চিল্লা শেষ করে গ্রামের বাড়ি চলে যেতেন। কিন্তু তার আগেই মাওলানা সা’দকে মসজিদে নেওয়ার কারণে তিনি ও তার মতো শতাধিক মুসল্লিকে বাহিরে পাঠিয়ে দেওয়া হয়। তাদের যাবতীয় জিনিসপত্র মসজিদের ভেতরেই রাখা হয়েছে।
চাঁদপুর থেকে ৩ দিনের চিল্লায় আসা সাইফুল ইসলাম (৪৫) প্রিয়.কম-কে জানান, আসরের নামাজের পর মসজিদে মালপত্র রেখে শীতের জামা কেনার জন্য গুলিস্তান গিয়েছিলেন তিনি। কিন্তু ফেরার পর আর মসজিদে প্রবেশ করতে পারেননি।
আরেক ভুক্তভোগী হায়দার আলী (৪২) প্রিয়.কম-কে জানান, তিনি তার ছোট ভাইকে নিয়ে চিল্লায় এসেছিলেন। ছোট ভাইকে নিয়ে রমনা পার্ক ঘুরে ফেরার পর আর মসজিদে ঢুকতে পারেননি। মালপত্র মসজিদের ভেতরে থাকার কারণে বাড়িতেও যেতে পারছেন না বলে অভিযোগ করেন তিনি।
সাধারণ মুসুল্লিদের দুর্ভোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে রমনা জোনের এডিসি নাভিদ কামাল শৈবাল সাংবাদিকদের বলেন, নিরাপত্তাজনিত কারণে মসজিদের মূল ফটক বন্ধ রাখা হয়েছে। চিল্লায় আসা মুসল্লিদের পরিচয়পত্র নিশ্চিত করে ভেতরে ঢুকতে দেওয়া হচ্ছে।
তিনি আরও জানান, মাওলানা সা’দকে নিরাপত্তা দেওয়ার জন্য কাকরাইল মসজিদের ভেতরে রাখা হয়েছে। সেই সাথে ওই এলাকায় যাতে কোনো ধরনের অপ্রীতিকর ঘটনা না ঘটে, সেজন্য ব্যাপক পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
দিল্লির নিজামুদ্দিন মারকাজের জিম্মাদার মাওলানা মোহাম্মদ সা’দ কান্ধলভী গত তিন বছর বিশ্ব ইজতেমার আখেরি মোনাজাত পরিচালনা করেন। কিন্তু সম্প্রতি তিনি কোরআন-সুন্নাহবিরোধী কথাবার্তা বলে বেশ সমালোচিত হন বলে অভিযোগ। ফলে তাবলিগ ও আলেম-ওলামাদের একটি অংশের মাঝে চরম অসন্তোষ বিরাজ করছিল। এরই পরিপ্রেক্ষিতে বুধবার তিনি যেন বিশ্ব ইজতেমায় অংশগ্রহণ করতে না পারেন, সেজন্য শাহজালাল আন্তর্জাতিক বিমানবন্দরের সামনে ঢাকা-ময়মনসিংহ মহাসড়কে তাবলিগ জামাতের একটি অংশ এবং আলেম-ওলামারা বিক্ষোভ মিছিল ও সমাবেশ করেন।
সূত্র: প্রিয় ডটকম