• Home
  • blog
Analysis BD
Ads
  • মূলপাতা
  • খবর পাতা
    • রাজনীতি
    • জাতীয়
    • আন্তর্জাতিক
    • অন্যান্য
  • বিশেষ পাতা
  • মতামত পাতা
    • কলাম
    • সম্পাদকের কলাম
    • নিবন্ধ
    • সাক্ষাৎকার
  • ইসলাম পাতা
  • ভিডিও পাতা
  • বিবিধ পাতা
    • অতিথি কলাম
    • ফেসবুক থেকে
    • ব্লগ থেকে

‘মধু কই কই বিষ খাওয়াইলা’

  • March 30, 2017

মিনার রশীদ

আজকের লেখার শিরোনামটি ধার করেছি বৃহত্তর চট্টগ্রাম অঞ্চলের একটি অত্যন্ত জনপ্রিয় আঞ্চলিক গান থেকে। ব্যক্তিজীবনের টানাপড়েন বা করুণ ট্র্যাজেডি নিয়ে গাওয়া এই গানটি আমাদের জাতীয় জীবনেও চমৎকারভাবে খাপ খেয়ে গেছে। ছ্যাঁক খাওয়া প্রেমিকের মতোই হয়েছে আজ ছ্যাঁক খাওয়া জাতির অবস্থা। টেকনাফ থেকে তেঁতুলিয়া পর্যন্ত দাগ খাওয়া মানুষের মনে গানের এ সুর ও ভাবটি অনুরণিত হচ্ছে।

এভাবে মধুর লোভ দেখিয়ে জনগণকে বিষ খাওয়ানোর উদ্যোগ শুরু করেছিল সোভিয়েত রাশিয়ার নেতৃত্বে কিছু কমিউনিস্ট সরকার। পশ্চিম ইউরোপ এবং যুক্তরাষ্ট্র যখন বাকস্বাধীনতা ও গণতন্ত্র প্রতিষ্ঠার মাধ্যমে তরতর করে অর্থনৈতিক ও সামাজিক উন্নতির সিঁড়ি বেয়ে এগোতে থাকে, তখন রাশিয়াসহ পূর্ব ইউরোপ অন্য রাস্তা ধরল। তারা প্রথমেই মানুষের কথা বলার স্বাধীনতাকে হরণ করে। সমালোচকদের করা হয় হত্যা, গুম না হয় দেশান্তরিত। কথিত উন্নয়নের জোয়ারে দেশকে ভাসিয়ে দেয়া হলো। কিছু চামচা সৃষ্টি করে জনগণকে উন্নয়নের গল্প শোনানো হতো। সারা দেশকে বঞ্চিত করে রাজধানীকে সাজাতে থাকে। অর্থাৎ সারা শরীর থেকে রক্ত এনে মুখকে ফোলানো হয়। হুবহু একই কাজ এ দেশে শুরু হয়ে গেছে।

‘মধু : বলে’ জাতিকে এ পর্যন্ত অনেক বিষ খাওয়ানো হয়েছে। এই বিষের বিক্রিয়ায় জাতির রীতিমতো ছটফট অবস্থা শুরু হয়ে গেছে। স্বাধীনভাবে মাথা উঁচু করে রাখার জন্য একটি জাতির শিরদাঁড়া থাকে। সেগুলো হলো শক্তিশালী বিরোধী দল, সেনাবাহিনী ও স্বাধীন গণমাধ্যম। এক এক করে বিভিন্ন কায়দায় জাতির এই সব শিরদাঁড়া কেটে ফেলা হয়েছে। গত ১০-১৫ বছরে সংঘটিত ঘটনাগুলোর দিকে দৃষ্টি দিলে অনেক মধুর ডিব্বা চোখে পড়ে। বিভিন্ন ‘চেতনা’র নাম দিয়ে জাতিকে কার্যত অচেতন বা নিস্তেজ করা হয়েছে।

দেশ ভাসছে এখন উন্নয়নের জোয়ারে। তবে দেশের মানুষ ভাসছে হতাশার সাগরে। কেউ কেউ ভাসছে রোহিঙ্গাদের সাথে আসল আন্দামান সাগরে। আমাদের উন্নয়নের জোয়ার দেখে নাকি প্রধানমন্ত্রীকে বিদেশীরা বলে থাকেন, আপনার হাতে কি জাদু আছে? আমাদের প্রধানমন্ত্রী তো আর ভিত্তিহীন বলতে পারেন না। অনুমান করতে কষ্ট হয় না, এই প্রশ্নটিও সম্ভবত করেছেন কোনো-না-কোনো সুজাতা সিং। এই সুজাতা সিংরা আমাদেরকে উন্নয়নের জোয়ারে ভাসালেও নিজেদের দেশকে কখনোই এমন উন্নয়নের জোয়ারে ভাসবেন না।

২০০৪ সালেই বিদেশী বিভিন্ন সংস্থা ও মিডিয়া এই দেশটিকে ইমার্জিং টাইগার হিসেবে ঘোষণা দিয়েছিল। এই কৃতিত্ব কখনোই বিএনপির একার ছিল না। ১৯৯১ থেকে গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়ায় ক্ষমতায় আসা সবাই এই কৃতিত্বের দাবিদার। অর্থনৈতিক উন্নয়নের সাথে সাথে বাকস্বাধীনতা ও মানবিক উন্নয়নের সূচকগুলো যেভাবে সামনে অগ্রসর হচ্ছিল, তা দেখেই সুজাতা সিংদের মাথা খারাপ হয়ে যায়।

বাংলাদেশের রাজনীতিতে ইন্ডিয়ার ভূমিকা নিয়ে আগে কিছুটা রাখঢাক ছিল, এখন আর সেটাও নেই। এ ব্যাপারে প্রধানমন্ত্রী আরেক ধাপ এগিয়ে গেলেন। তিনি নিজেকে ছাড়া তার প্রতিদ্বন্দ্বী সবাইকেই ইন্ডিয়ার দালাল বলে অভিহিত করেছেন। নিজের রাজনৈতিক সঙ্গী এবং মন্ত্রীর পদমর্যাদার বিশেষ দূত এরশাদেরও এই দালালির অভিযোগ থেকে রেহাই মেলেনি।

অথচ ২০১৪ সালের নির্বাচনের প্রাক্কালে সুজাতা সিং কথিত দালাল এরশাদকে স্থান-কাল-পাত্র ভুলে সেই নির্বাচনে অংশগ্রহণের জন্য হুমকি-ধমকি দিয়েছিলেন। যাদের ক্ষমতায় রাখার জন্য পাশের দেশের সুজাতা সিং এমন পাগলপারা হয়েছিলেন, তাদের অবশ্য কস্মিনকালেও দালাল বলা যাবে না। এ দেশের মানুষ ভাত নয়, ঘাস খেয়ে বড় হয়েছে।

ইন্ডিয়ার পররাষ্ট্রসচিব সুজাতা সিংয়ের হতাশার কারণ ছিল ‘বিশ্ববেহায়া’ খেতাব পেলেও এরশাদ সেই নির্বাচনে অংশ নিতে লজ্জা পাচ্ছিলেন। আশির দশকে স্বামীকে আঁটকুড়া অপবাদ থেকে বাঁচানোর জন্য এক মহিলা গর্ভবতী না হয়েও হাসপাতালে ভর্তি হয়েছিলেন। রেডিমেইড একটা সন্তান প্রসব করে জাতিকে দেখিয়েছিলেন। চিত্রকর কামরুল হাসান এটা দেখেই এরশাদকে বিশ্ববেহায়া খেতাব দিয়েছিলেন। এবারও মহীয়সী নারীই এগিয়ে এলেন। এবার সুস্থ্ স্বামীকে হাসপাতালে ভর্তি করালেন। হাসপাতাল থেকেই মন ভালো করার জন্য গলফ খেলতে পাঠালেন। স্বামী-স্ত্রীর যৌথ প্রেগন্যান্সি আর সুজাতা সিংয়ের সরাসরি ধাইগিরিতে জন্ম নিলো একবিংশ শতাব্দীর এক কিম্ভূতকিমাকার গণতান্ত্রিক সরকার।

জাতির সৌভাগ্যকে সমূলে ধ্বংস করে সেই সব সম্পদ দিয়ে এখন উন্নয়নের ভেলকি দেখানো হচ্ছে। রাস্তাঘাট নির্মাণে এক টাকার জায়গায় ১০ টাকা খরচ করে সমাজে একটা লুটেরা শ্রেণী তৈরি করা হয়েছে। প্রশাসনে চকোলেট বিলিয়ে সবাইকে বশ মানানো হয়েছে। দেশ ও জাতির ভবিষ্যৎ চিন্তার চেয়ে তারা ক্যালকুলেটরে সর্বদা নিজের সুখের হিসাব করেন। ফলে পুরো দেশটিই যেন জিম্মি হয়ে পড়েছে। এমতাবস্থায় দেশের স্বাধীনতা সার্বভৌমত্ব বিপন্ন করে বাস্তবে একদলীয় শাসন পাকাপোক্ত করে ফেলা হয়েছে। বিরোধী দল রাস্তায় নামলেই নির্যাতন। অনুগত মিডিয়া দাঁত কেলিয়ে বলে, বিরোধী দলের হ্যাডমের অভাব। কোনো স্থায়ী বা সাসটেইনেবল উন্নয়ন নয়, সব কিছু কেন্দ্রীভূত হয়ে পড়েছে ক্ষমতা রক্ষা আর তাকে পাকাপোক্ত করার মধ্যে।

মূলত ২০০৭ সালের ‘এক-এগারো’ নামক মধু দিয়েই এর শুরু। দুর্নীতির বিরুদ্ধে যুদ্ধ, জ্ঞানভিত্তিক সমাজ প্রতিষ্ঠা ইত্যাদি মুখরোচক কথা বলে জাতির সব কিছুকে ওলটপালট করে ফেলা হয়। দেশের সব কিছুর জন্য রাজনীতিবিদদের দায়ী করে বিরাজনীতিকরণের এক সর্বনাশা প্রচারণা চালানো হলো। রাজনৈতিকভাবে অসচেতন একটা বিরাট জনগোষ্ঠী এদেরকে নৈতিক সমর্থন জোগায়। সারা বছর ঘুমিয়ে থেকে যারা হঠাৎ জেগে ওঠে, তারা রাতারাতি দেশকে ফেরেশতাদের দেশ বানিয়ে ফেলার কোশেশ করেছে। ফলে পুরো পরিকল্পনার পেছনের মূল খেলারামের টার্গেট ও রোডম্যাপ আঁচ করতে এরা ভুল করে বসে।

এক করপোরেট মতলববাজির দুটি পত্রিকার সম্পাদক তো জাতিকে মধু খাওয়ানোর এই কৃতিত্বটি নেয়ার জন্য রীতিমতো কাঁধে গামছা ঝুলিয়ে রাস্তায় নেমে পড়েন। তখন আজকের প্রধানমন্ত্রী দাবি করেছিলেন, এটা তাদের আন্দোলনের ফসল। একপর্যায়ে বেগতিক অবস্থা দেখে অন্য এক নেতা সংশোধনী টানেন, এটা আমাদের ( লগি-বৈঠা ) আন্দোলনের ফসল নয়Ñ পরিণাম। এই কথা বলে সেই নেতার ওই যে কপাল পুড়েছে, তা এখনো ঠিক হয়নি।

জনগণ ছয় মাসের মধ্যেই ১-১১ নামক মধুরূপী বিষয়টি সম্পর্কে অবগত হয়ে যায়। কিন্তু সেই ষড়যন্ত্র থেকে বের হতে পারেনি। অন্য নেত্রী তখন, ‘দেশ বাঁচাও মানুষ বাঁচাও’ বলে ডাক দিলেও জনগণ তাতে তেমন কর্ণপাত করেনি।

এক-এগারোর মধু খাওয়াতে গিয়ে দেশরক্ষা বাহিনীকে মুদির ব্যবসায় টেনে আনা হয়। তার শেষ পরিণতি সবাই দেখেছি। সেই ঘটনার পর দেশরক্ষার অতন্দ্র প্রহরী বিডিআরকে ভেতর-বাহির থেকে সম্পূর্ণ বদলে ফেলা হয়। দেশের নিরস্ত্র জনগণকে সরাসরি গুলি করলেও বর্ডারে বিএসএফের সাথে তাদের অন্য ভূমিকায় দেখা যায়। বিএসএফের সাথে রাখিবন্ধন, হোলি খেলার মাধ্যমে ভ্রাতৃত্ববন্ধন এবং তাদের গুলিতে বাংলাদেশী মারা গেলে সেই লাশ গ্রহণ এই ধরনের কাজেই বেশি দেখা যায়।

এত দিন বড়শিতে আটকে মাছটিকে ক্লান্ত করা হয়েছে। এখন টেনে তোলার সময়; প্রতিরক্ষা চুক্তি করার মোক্ষম সময়। এই চুক্তিটি স্বাক্ষরিত হয়ে গেলেই শিরোনামের গানটি অন্য ব্যঞ্জনায় ধরা পড়বে। মেজর জলিল কত সুন্দরভাবেই না বলে গেছেন, অরক্ষিত স্বাধীনতাই পরাধীনতা, হায়রে জাতি! তার পরেও হুঁশ হলো না! লাখো জীবনের বিনিময়ে অর্জিত স্বাধীনতা কারো কলমের এক খোঁচায় হারিয়ে যাওয়ার মতো ঠুনকো ব্যাপার হতে পারে না।

ইংরেজি দৈনিক The Independent-এ এই চুক্তির খসড়া প্রকাশ করা হয়েছে। ওই পত্রিকাটি প্রধানমন্ত্রীর এক উপদেষ্টার মালিকানাধীন। কাজেই সরকারের ইচ্ছাতেই যে এটি প্রকাশিত হয়েছে তা ধরে নেয়া যায়। এই চুক্তিটি দেখলে ‘অত্যন্ত নির্দোষ’ একটা চুক্তি বলে মনে হবে।

ইন্ডিয়ার সঙ্গে বাংলাদেশের প্রতিরক্ষা শিল্প, স্পেস টেকনোলজি, টেকনিক্যাল সহযোগিতা এবং সমুদ্র অবকাঠামো ক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যাপারগুলো চুক্তির মধ্যে স্থান পাবে। এক দেশ অন্য দেশে সামরিক প্রতিনিধিদল পাঠানোর বিষয়ে পদক্ষেপ গ্রহণ করবে। উভয় দেশের ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা, সামরিক বিশেষজ্ঞ বিনিময়, ট্রেনার ও পর্যবেক্ষক, সামরিক বিষয়াদি সম্পর্কে তথ্য বিনিময় ইত্যাদি থাকবে। সামরিক সরঞ্জাম তদারকি, চিকিৎসা, খেলাধুলার ব্যবস্থা থাকবে। দুর্যোগ মোকাবেলার ক্ষেত্রে প্রশিক্ষণ ও ত্রাণব্যবস্থায় সহযোগিতা করা হবে। আর্মি, নৌবাহিনী, বিমানবাহিনীতে স্টাফপর্যায়ে উভয় দেশ আলোচনার ব্যবস্থা করবে। আলোচনার মাধ্যমে সামরিক বিষয়ে সমস্যার সমাধান করবে। উভয় দেশের সামরিক বাহিনী নিজেদের মধ্যে বার্ষিক আলোচনার ব্যবস্থা করবে। উভয় পক্ষ একই সময়ে সামরিক জাহাজ ও বিমানবাহিনীর সফরের ব্যবস্থা করবে। আন্তর্জাতিক সীমান্তে যৌথ পাহারার ব্যবস্থা করবে। উভয় দেশ যৌথ উদ্যোগে সামরিক শিল্প ক্ষেত্রে সহযোগিতার ব্যবস্থা করবে। উভয় দেশ আলাপ-আলোচনার ভিত্তিতে বিভিন্ন নীতি ও জাতীয় নিরাপত্তা বিষয়ে পরস্পরকে সহযোগিতা করবে। সামরিক বিজ্ঞান, প্রযুক্তি, গবেষণা ইত্যাদি ক্ষেত্রে সফরের মাধ্যমে বিজ্ঞানী, প্রকৌশলীদের বিজ্ঞান-প্রযুক্তি বিষয়ে তথ্য বিনিময় ও ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করা হবে।’

চুক্তিটিতে ‘উভয়’ শব্দটি দিয়ে মধুটি লাগানো হয়েছে। নিচের গল্পটি বিষয়টির অন্তর্নিহিত অর্থ বুঝতে আরেকটু সহায়তা করবে।

গ্রামের প্রভাবশালী মোড়ল এবং সদ্য বিবাহিত নিরীহ করিম শেখের মধ্যে একটি চুক্তি বা বোঝাপড়া সম্পাদিত হয়েছে। মোড়ল সাহেব বিয়ে করেছেন ১৯৪৭ সালে। আর করিম শেখ ওই সেদিন মানে ’৭১ সালে। করিম শেখের বাড়ির তিন দিকেই মোড়লের জমি। কাজেই একজনের অন্দরমহলে অন্যজনের সহজ স্বাভাবিক প্রবেশের জন্যই এই সহযোগিতা ও নিরাপত্তা চুক্তি। এই চুক্তির পেছনে আগ্রহ, উৎসাহ, উদ্দীপনা সবই বলতে গেলে মোড়লের পক্ষ থেকে। চুক্তিটি অত্যন্ত ন্যায্য, চুক্তির আওতায় দুই প্রতিবেশীর উভয়েই সমান সুযোগ-সুবিধা উপভোগ করতে পারবে।

উভয়েই একে অপরের অন্দরমহলে যখন-তখন প্রবেশ করতে পারব। পারস্পরিক হৃদ্যতা ও আস্থা বৃদ্ধির নিমিত্তে দু’জনের স্ত্রীরা এই দু’জনের যার সাথে ইচ্ছা বিদেশভ্রমণ করতে পারবে। দু’জনের যে-কেউ কোনো শত্রু কর্তৃক আক্রান্ত হলে উভয়েই সেই শত্রুর বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়াবে।

করিম শেখ খেটে খাওয়া মানুষ। সারা দিন কাজের পর নাক ঢেকে ঘুম দেয়। মোড়ল সাবের বাড়িতে কিংবা বেডরুমে যাওয়ার সময় কই? আর মোড়ল সাবের অবসরের অভাব নেই। চুক্তির প্রতি তার আগ্রহটা এখন স্পষ্ট হচ্ছে। করিম শেখ সব টের পেলেও মুখ ফুটে কিছু বলতে পারে না। হ্যাডমের অভাব। চুক্তিতে ‘উভয়’ শব্দটি লেখা থাকলেও চুক্তির ব্যবহার একতরফাই হচ্ছে। রাতবিরাতে যখন তখন করিম শেখের কুটিরে চলে আসে মোড়ল সাব। করিম শেখ বাড়িতে থাকলেও আসে, না থাকলেও আসে। করিম শেখের বউকে পানের খিলি বানিয়ে দিতে বলে। মোড়ল অত্যন্ত তৃপ্তির সাথে পান খায়, আর কড়মড় করে করিম শেখের নতুন বিয়ে করা বউয়ের দিকে তাকায়। সহজ-সরল বউটা সঙ্কোচে জড়সড় হয়ে পড়ে।

করিম শেখকে ক্ষেতের ফসল বিক্রি করতে একটু দূরের গঞ্জে যেতে হয়। বাড়ি ফিরতে রাত হয়ে যায়। জঙ্গি দুষ্টুরা রাতের বেলা করিম শেখের টিনের চালে ইটা মারে। করিম শেখের নতুন বউ আতঙ্কিত হয়ে পড়ে। কাজেই সহৃদয় মোড়ল সাব না এসে পারেন না।
চুক্তিমতো করিম শেখও মাঝে মধ্যে মোড়লের বেডরুমে যায়। বলতে গেলে, মোড়লই টেনে নিয়ে যায়। অন্য কিছু চিন্তা তো দূরের কথা- মোড়ল গিন্নিকে দেখে সমীহে করিম শেখের চোখ নুইয়ে আসে। এ দিকে, চুক্তি থেকে মোড়ল সাব যে সুযোগ-সুবিধা নিচ্ছেন তা করিম শেখ কল্পনাও করতে পারে না।

আশঙ্কা হয়, ইন্ডিয়া ও ভারতের মধ্যকার চুক্তিটির বাস্তব প্রয়োগ হতে পারে এই চুক্তির মতোই। করিম শেখদের বেডরুমকে ঘিরে মোড়ল সাবদের যে আগ্রহ ও পরিকল্পনা থাকে, করিম শেখদের সেটা থাকলেও কখনো সেটা বাস্তবায়নের সাহস ও সুযোগ হয় না।
বর্তমান সরকার ও তার মুরব্বিরা এই দেশের মানুষকে সাব হিউম্যান লেভেলের কোনো প্রাণী বলে জ্ঞান করে। এই হতাশা দেশের ১৬-১৭ কোটি মানুষের মাঝে বিরাজ করছে। জানি না, নিচের চুক্তিটি এই হতাশা কতটুকু কাটাতে পারবে।
এক রোববার ভরদুপুরে স্বামী-স্ত্রীর একটু একান্ত সান্নিধ্যে কাটাতে ইচ্ছে হলো। কিন্তু ঘরে ছেলে রয়েছে। অনেক ভেবে ওরা একটা উপায় বের করল-
দু’জনে ছেলেটাকে জানালায় দাঁড় করিয়ে বলল, বাইরে যা যা হচ্ছে সে যেন মনোযোগ দিয়ে দেখে এবং ক্রিকেটের মতো করে চমৎকারভাবে তার ধারাবিবরণী দিতে থাকে। বাবা-মায়ের নির্দেশমতোই সে যথাযথভাবে তার ওপর অর্পিত দায়িত্ব পালন করে যায়। সে বলতে থাকে,
জামাল চাচা গাড়িতে করে যাচ্ছে…। চঞ্চল জেঠু বাগানে পায়চারি করছে…। সুখরাম কাকু পরিবার নিয়ে বাইরে ঘুরতে যাচ্ছে…। নবীন দাদুর ড্রাইভার গাড়ি ধুচ্ছে…। সবিতা কাকিমা বাইরে চুল শুকাচ্ছে…। রসময় কাকু আর কাকীমা মনে হয় তোমাদের মতো একই কাজ করছে …
বাপ ভেতর থেকে চিৎকার করে উঠল :
হারামজাদা, তুই কী করে বুঝলি ওরা একই কাজ করছে?
ছেলে : ওনার ছেলেও জানালায় দাঁড়িয়ে ধারাবিবরণী দিচ্ছে যে!
দেশের জনগণ যে আসলেই সাবালক হয়ে গেছে, সেই খেয়ালটি নেই। জনগণ সুবিধামতো রসময়দের কীর্তি টের পেয়ে যাবে। একটা পরিপূর্ণ সাবালক জাতিকে এমন কিছিমে নাবালক ভাবার পরিণতিও মনে হয় খুব সুখকর হবে না।

[email protected]

সূত্র:  নয়াদিগন্ত

Facebook Comments

comments

  • Share this post
  • twitter
  • pinterest
  • facebook
  • google+
  • email
  • rss
ভ্রাতৃপ্রতিম সম্পর্কে উদ্বেগ থাকতে নেই
নাসিরপুরে আত্মঘাতি বোমায় ৭/৮ জঙ্গি নিহত

Related Posts

  • কলাম
  • মতামত
  • Mar 30, 2017
ঢাকা-থিম্পুকে ধরে রাখতে দিল্লি মরিয়া
  • কলাম
  • মতামত
  • Mar 30, 2017
বিএনপি কি নিষিদ্ধ রাজনৈতিক দল?
  • কলাম
  • মতামত
  • Mar 30, 2017
পুলিশ হেফাজতে মৃত্যু কি এখন ‘স্বাভাবিক’?

Leave a Comment Cancel reply

Your email address will not be published. Required fields are marked *

সাম্প্রতিক পোষ্ট
    • Apr 25, 2018
    • 0
    • 73 Views
    জাতীয় নির্বাচনে সেনা নিয়োগের যৌক্তিকতা
    • Top Post
    • মতামত
    • Apr 25, 2018
    • 0
    • 82 Views
    গণমাধ্যমের স্বাধীনতা: দক্ষিণ এশিয়ায় সবচেয়ে পিছিয়ে বাংলাদেশ
    • Home Post
    • জাতীয়
    • Apr 25, 2018
    • 0
    • 487 Views
    ‘হাসিনা যতদিন জীবিত আছেন, ততদিন ক্ষমতায় থাকবে আ.লীগ’
    • Home Post
    • রাজনীতি
    • Apr 25, 2018
    • 0
    • 273 Views
    ‘তারেককে নিয়ে বিতর্ক করতে গিয়ে নিজেরাই গর্তে পড়েছে’
    • Desk
    • Home Post
    • রাজনীতি
    • Apr 25, 2018
    • 0
    • 808 Views
    ভুয়া ডকুমেন্ট দেখিয়ে বেকায়দায় পররাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী
    • Desk
    • Home Post
    • বিশেষ প্রতিবেদন
    • Apr 24, 2018
    • 0
    • 178 Views
    ‘নির্বাচন নিয়ে ভারতের নাক গলানোর কিছু নেই’
    • Home Post
    • রাজনীতি
সর্বাধিক পঠিত
    • Apr 9, 2017
    • 0
    • 93300 Views
    দেশ তো বিক্রি হয়ে গেলো, এখন আমরা কি সবাই বিদেশী?
    • ফেসবুক থেকে
    • Apr 24, 2017
    • 0
    • 82002 Views
    হাওরে ১২৭৬ মেট্রিক টন মাছ নষ্ট, হাঁস মরেছে ৩৮৪৪টি
    • Home Post
    • জাতীয়
    • Apr 4, 2017
    • 0
    • 81395 Views
    এক্সক্লুসিভ : সুইডিশ রেডিওতে র‌্যাবের গুম-খুনের রোমহর্ষক অডিও ফাঁস
    • Home Post
    • Top Post
    • বিশেষ প্রতিবেদন
    • Apr 18, 2017
    • 0
    • 75501 Views
    আলেমদের ‘কুকুরের বাচ্চা’ বলে গালি দিলেন জাসদ নেতা বাদল!
    • ভিডিও
    • Apr 5, 2017
    • 0
    • 65232 Views
    আমি কুরআনের ময়দানে ফিরে আসবো ইনশাআল্লাহ
    • রাজনীতি
    • Apr 26, 2017
    • 0
    • 61757 Views
    হাওরে দুর্গত মানুষের মাঝে শিবির সভাপতির ত্রাণ বিতরণ
    • রাজনীতি
Analysis BD

মতামত ও পাঠক কলামে প্রকাশিত সকল কন্টেন্ট ও অন্য ওয়েবসাইট থেকে সংগৃহীত কনটেন্টের জন্য এনালাইসিস বিডি দায়ী নয়। E-mail: [email protected]

© 2017 All rights reserved
Facebook